ধুনটে মাদ্রাসা ছাত্রকে হত্যা করে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল

ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার ধুনটে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরেই মাদ্রাসা ছাত্র ফাহমিদ হাসান শুভ (১৪) কে শ্বাসরোধে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল বলে ময়না তদন্তের রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের দীর্ঘ ৫ মাস পর সোমবার (১৫ জানুয়ায়ি) নিহত ওই ছাত্রের বাবা বাদী হয়ে ধুনট থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত ৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করেছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলো- ধুনট সদর ইউনিয়নের উল্লাপাড়া গ্রামের মৃত তোরাব শেখের ছেলে আব্দুল মান্নান (৫০), তার স্ত্রী মদিনা খাতুন (৩৮), ছেলে মারুফ শেখ (২০) ও ফরহাদ শেখের স্ত্রী খোদেজা খাতুন (৪৫)।

থানাপুলিশ ও মামলাসূত্রে জানাগেছে, নিহত ফাহমিদ হাসান শুভ বগুড়ার শেরপুর উপজেলার খন্দকারটোলা এলাকার সুলতান শেখের ছেলে। সে তার নানা ফরিদ শেখের ধুনট উপজেলার উল্লাপাড়া গ্রামে বসবাস করে স্থানীয় একটি ক্বওমী মাদ্রাসায় লেখাপড়া করতো। গত কোরবানী ঈদে সে তার নানান বাড়ি থেকে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়। ঈদের ছুটি শেষে ২০২৩ সালের ৮ জুলাই শুভ তার বাবার বাড়ি থেকে আবারো নানার বাড়িতে ফিরে আসে।

পরদিন ৯ জুলাই দুপুরে নানা ফরিদ শেখ নাতিকে বাড়িতে রেখে বাজারে যায়। পরে বাজার থেকে ফিরে এসে ঘরের মধ্যে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় নাতি শুভর ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায়। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। এঘটনায় ধুনট থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়। এদিকে দীর্ঘ ৫ মাস পর ময়না তদন্তের রিপোর্টে আত্মহত্যার ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড বলে প্রমাণিত হয়েছে।

এবিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ধুনট থানার এসআই অমিত বিশ্বাস জানান, মাদ্রাসা ছাত্র ফাহমিদ হাসান শুভকে শ^াসরোধে হত্যার পর তার মরদেহ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল বলে ময়না তদন্তের প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে। এঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে আসামীদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, নিহতের নানা ফরিদ শেখের কোন ছেলে সন্তান না থাকায় নাতি ফাহমিদ হাসান শুভকে তার বাড়ির জায়গা লিখে দিতে চেয়েছিলেন। একারনে ক্ষিপ্ত হয়ে ফরিদ শেখের ছোট ভাই ফরহাদ শেখের স্ত্রী খোদেজা খাতুন, মামাতো ভাই আব্দুল মান্নান, তার স্ত্রী মদিনা খাতুন ও ছেলে মারুফ শেখ তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে মরদেহ বাঁশের তীরের সঙ্গে ঘরে ঝুলিয়ে রাখে।

এবিষয়ে ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সৈকত হাসান বলেন, হত্যা মামলা দায়েরের পর আসামীদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।