ধুনটে নদীর গতিপথ বন্ধ করে অবৈধভাবে বালু বিক্রি!
বগুড়ার ধুনট পৌর এলাকার জিঞ্জিরতলা-দাসপাড়া ইছামতি নদীর গতিপথ বন্ধ করে অবৈধভাবে নদী পাড়ের বালু ও মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। -অনুসন্ধানবার্তা

ইমরান হোসেন ইমন, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার ধুনটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী খনন প্রকল্পের বালু ও মাটি ট্রাকযোগে অবৈধভাবে বিক্রি করা হচ্ছে। এতে এদিকে যেমন সরকারের কোটি কোটি টাকার প্রকল্প ভেস্তে যাচ্ছে, তেমনি নদীর দু’পাড়ের ফসলী জমি ভাঙ্গনের কবলে পড়তে যাচ্ছে। তবে এসব বিষয়ে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না ভূমি মালিকেরা।

জানাগেছে, ধুনট উপজেলার বাঙ্গালী ও ইছমতি নদীর নাব্যতা ফেরাতে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নদী খনন প্রকল্পের কাজ হাতে নেয়। গত এক বছর আগে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো ওই সব নদী খনন করে বালু ও মাটি দিয়ে নদীর দু’পাড় বেধে দেয়। যাতে নদীর তীরবর্তী ফসলী জমিগুলো ভাঙ্গনের কবল থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী ভূমিদস্যুরা ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তোলনকৃত বাঙ্গালী ও ইছমতি নদীর দু’পাড়ের বালু ও মাটি অবৈধভাবে বিক্রি করে আসছে।

সরেজমিন ধুনট পৌর এলাকার জিঞ্জিরতলা-দাসপাড়া গ্রামের ইছমতি নদীর ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, এক্সেভেটর মেশিন দিয়ে দিনে দুপুরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী খনন প্রকল্পের বালু ও মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। অবৈধভাবে বালু ও মাটি বিক্রির জন্য ইছমতি নদীর মাঝে রাস্তা নির্মান করা হয়েছে। আর একারনে নদী পানি শুণ্য হয়ে পড়ায় ভাটিতে অবস্থিত হাজারো হেক্টর ফসলী জমিতে পানি সেচ দেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা।

স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, ধুনট পৌর এলাকার জিঞ্জরতলা গ্রামের সাবেক কাউন্সিলর আলামিন তরফদারের নেতৃত্বে অবৈধভাবে বালু ও মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। গত তিন দিন প্রায় ৩শ গাড়ি বালু বিক্রি করা হয়েছে। প্রতি গাড়ি বালু ও মাটির দাম নেয়া হচ্ছে ৬শ টাকা করে।

এবিষয়ে ধুনট পৌরসভার জিঞ্জরতলা গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ আলী, সোনা মিয়া, দাসপাড়া গ্রামের ফটিক চন্দ্র দাস ও নির্মল চন্দ্র দাস জানান, নদীর দু’পাড়ে আমাদের কৃষি জমি রয়েছে। জমি চাষাবাদ করে আমাদের সংসার চলে। কিন্তু নদীর মাঝে রাস্তা বানিয়ে পানি প্রবাহ বন্ধ করে বালু বিক্রি করা হচ্ছে। একারনে ভাটিতে নদী পানি শূণ্য হওয়ায় আমাদের ফসলী জমিতে পানি সেচ দিতে পারছি না। এছাড়া নদী পাড়ের বালু ও মাটি বিক্রি করায় আমাদের কৃষি জমিগুলো আগামী বর্ষা মৌসুমেই ভাঙ্গনের কবলে পড়তে যাচ্ছে। তবে এবিষয়ে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার মেলেনি।

তবে এবিষয়ে অভিযুক্ত সাবেক পৌর কাউন্সিলর আলামিন তরফদার দাম্ভিকতার সঙ্গে বলেন, সব ম্যানেজ করেই বালু ও মাটি বিক্রি করা হচ্ছে।

এবিষয়ে ধুনট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক খান বলেন, পানি উন্নয়নবোর্ডের সঙ্গে কথা বলে এবিষয়ে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।