বগুড়ায় মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর, গ্রেফতার ১

নন্দীগ্রাম (বগুড়া) প্রতিনিধি: অনুসন্ধানবার্তা
বগুড়ার নন্দীগ্রামে হাটকড়ই মহাশ্মশানের কালীমাতা মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুরের অভিযোগে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

আটককৃত যুবক ফয়সাল করিম রেজা (৩৫) হাটকড়ই স্কুলপাড়া এলাকার খোরশেদ আলম টুকুর ছেলে। মঙ্গলবার সকালে নন্দীগ্রাম উপজেলার ভাটগ্রাম ইউনিয়নের হাটকড়ই সার্বজনীন মহাশ্মশান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সেখানকার কালীমাতা মন্দিরের মেঝেতে প্রতিমা উপুর হয়ে ভাঙা অবস্থায় পড়ে ছিল। খবর পেয়ে মহাশ্মশানে ভিড় করেন মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের শতশত মানুষ। সবধর্মের মানুষ একত্রিত হয়ে দোষী ব্যক্তির শাস্তির দাবি জানান।

এদিকে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পদোন্নতিপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার) মো: আব্দুর রশিদ, সহকারী পুলিশ সুপার মো. ওমর আলী, নন্দীগ্রাম থানার ওসি আজমগীর হোসাইন আজম। পুলিশ কর্মকর্তারা দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে উত্তেজিত পরিস্থিতি শান্ত হয়।

আটক যুবকের বাবা খোরশেদ আলম টুকু দাবি করেন, তার ছেলে (ফয়সাল করিম রেজা) গত দুই বছর ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন। কিছুদিনপূর্বে সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি থানার একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতো। মানসিক সমস্যা হওয়ায় বর্তমানে বাড়িতে থাকে। তিনি বলেন, আমার ছেলে অপরাধ করলে আইন অনুযায়ী বিচার হোক। সে পাগল, শাস্তিটা যেন কম হয়।

আটক যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন নন দাবি করেছেন হাটকড়ই মহাশ্মশানের উপদেষ্টা অরুন জ্যতি, কমিটির সভাপতি সুমন চন্দ্র পাল ও সাধারণ সম্পাদক পরিমল চন্দ্র রায়সহ হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। তারা বলেন, এলাকার সবধর্মের মানুষ ওই যুবকের শাস্তি চান। এখানে ধর্মীয় কোনো ভেদাভেদ নেই। মন্দিরে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুর করে সম্প্রদায়কে উস্কে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। হাটকড়ই এলাকায় একইস্থানে কাছাকাছি মসজিদ ও মন্দির। হিন্দু-মুসলিম মিলেমিশে উৎসব পালন ও বসবাস করে। দুই ধর্মের মানুষের দীর্ঘদিনের ভালোবাসার সেতুবন্ধন দৃষ্টান্ত ধরে রেখেছে।

নন্দীগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজমগীর হোসাইন আজম বলেন, হাটকড়ই এলাকায় কাছাকাছি মসজিদ, মন্দির ও মহাশ্মশান। সবধর্মের শান্তিপূর্ণ সেতুবন্ধন। মন্দিরে হামলা ও প্রতিমা ভাঙচুরের মামলায় একজনকে গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। সে প্রতীমা ভাংচুরের কথা স্বীকার করেছে। এ ঘটনায় অন্য কেউ জড়িত থাকলে তাকেও আইনের আওতায় আনা হবে।