কাজিপুরে বালু উত্তোলনে হুমকিতে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষন প্রকল্প

শাহজাহান আলী,কাজিপুর(সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের কাজিপুরে যত্রতত্র বালু উত্তোলনের ফলে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষন প্রকল্প হুমকির মুখে পড়েছে। সেই সাথে সরকারি রাস্তাঘাটের উন্নয়ন কাজ ব্যপকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত যমুনার ডানতীর সংরক্ষণ প্রকল্প ও প্রতিদিন শত শত বালুবাহি ট্রাক চলাচলের কারণে কোটি কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত কাঁচা-পাঁকা রাস্তাঘাট মাটির সাথে মিশে যেতে বসেছে।

এদিকে বালু মহল থেকে হাতে গোনা গুটি কয়েক ব্যক্তি লাভবান হলেও শত শত লোকজনকে প্রতিনিয়ত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

কাজিপুর উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সরকারি নিয়ম অনুযায়ি ২৩টি বালুর পয়েন্টের জন্য সরকারিভাবে বালু উত্তোলন ও সংরক্ষনের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

এদিকে খোঁজনিয়ে জানা গেছে, কাজিপুরের উত্তরের শেষসীমানা মাইজবাড়ির ঢেকুরিয়া থেকে দক্ষিনের শূভগাছা পর্যন্ত প্রায় ৪৪টি বালু মহল তৈরি করে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

অনুসন্ধানে জানাযায়, কাজিপুর সদরের কিছু নির্ধারিত জমি থেকে বালু উত্তোলনের জন্য সরকারি নিয়ম বেধে দেয়া থাকলেও ইজারাদারগণ গোটা কাজিপুর উপজেলায় নুতন নতুন বালুর পয়েন্ট তৈরি করে নিয়ম ভেঙ্গে অর্থের বিনিময়ে সাব ইজারা দিয়ে বালু উত্তোলন করাচ্ছেন।

এতে করে কাজিপুরের সরকারি কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পাকা রাস্তাগুলো এখন চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

বালুর ট্রাক চলাচলের কারনে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী সহ সাধারন লোকজনের যাতায়াতের ঝুঁকির পাশাপাশী বালু বহনকারি ট্রাকের যাতায়াতের ফলে সৃষ্ট ধুলাবালিতে রোগবালাই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষন কাজের জন্য বসানো জিও ট্যাক বা বালুর বস্তাগুলো।

এবিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও হায়দার আলী জানান, আনলোডকৃত ড্রেজার যমুনা নদীর তীরে বাঁধতে প্রতিনিয়ত বালুভরা জিও বস্তাগুলো লোহার রড দিয়ে ফুটো করার কারণে বালু ধুয়ে আলগা হয়ে তীর সংরক্ষন কাজ হুমকিতে পড়ছে।

তিনি আরও জানান, ইজারাদারগন নিয়ম না মেনে নদী তীর সংরক্ষনের কাছ ঘেঁষে রাতের আধারে বালু উত্তোলনের কারনেও তীর সংরক্ষন কাজ হুমকিতে পড়ছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে নদী থেকে ৫০০ ফুট দূরবর্তী স্থানে বালু রাখার জন্য নির্দেশনা দেয়া হলেও মহলকারিরা সে নিয়ম মানছে না।

তিনি অভিযোগ করেন, যত্রতত্র বালু উত্তোলনের কারণে সম্প্রতি ঢেকুরিয়া এলাকায় তীর সংরক্ষন কাজে ধ্বসের অন্যতম কারন।

শুধু তাই নয় নতুন বালু পয়েন্ট তৈরির কারিগররা বাঁধে বন বিভাগের রোপিত গাছগুলো কর্তন করে ফেলছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন এমপি তারভীর শাকিল জয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

অপরদিকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়গুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।