বগুড়ায় শিশু হত্যায় মৃত্যুদণ্ড

স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা:
বগুড়ার শাজাহানপুরে ৫ বছরের শিশু রোমানকে হত্যার পর গুম করার ঘটনায় পলাতক দুই আসামীর মৃত্যুদণ্ড ও একজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীদের ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-৩ এর বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন এই রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামীরা হলো- বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার ক্ষুদ্র কুষ্টিয়া গ্রামের আব্দুল খালেক ও চুপি নগর দক্ষিণপাড়া এলাকার আব্দুল মাজেদ। রায়ের সময় এই দুইজন আসামী পলাতক ছিলো। এ ছাড়াও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী আব্দুর রাজ্জাক ক্ষুদ্র কুষ্টিয়া গ্রামের বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মামলাসুত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট শাজাহানপুর উপজেলার চুপি নগর এলাকার মাহবুর রহমানের ৫ বছরের ছেলে রোমানকে হত্যা পর গুম করে আসামিরা। পরে ওই বছরের ২৮ আগস্ট একই এলাকার খলিল নামে একজনের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে রোমানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই দিন নিহতের বাবা মাহবুবুর রহমান শাজাহানপুর থানায় তাদের তিনজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী জহুরুল ইসলাম জানান, রোমানের দাদার নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আসামী খালেক ও মাজেদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছিল। এ ছাড়া নিহতের পরিবারের সঙ্গে তাদের জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। এসবের প্রতিশোধ নিতেই আব্দুল খালেক ও আব্দুল মাজেদ শিশু রোমানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। তারা আব্দুর রাজ্জাকের মাধ্যমে রোমানকে চকলেটের লোভ দিয়ে নিয়ে আনেন। এ কাজের জন্য আব্দুর রাজ্জাককে ৮ হাজার টাকা দেন খালেক ও মাজেদ।

খালেক ও মাজেদ দুজন মিলে রোমানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে ওই শিশুকে এলাকার এক প্রতিবেশির বাড়ির সেপটিক ট্যাংকের ভিতর গুম করে রাখেন। রোমান নিখোঁজের পর খালেকের আচরণে সন্দেহ হওয়ায় তাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনা স্বীকার করেন। এ সময় তিনি মাজেদ ও রাজ্জাকের সম্পৃক্ততাও জানান। পরে তাদের দেয়া তথ্যে রোমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

আইনজীবী জহুরুল ইসলাম আরো জানান, আসামীরা হত্যার দায় স্বীকার করে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দিও দিয়েছেন। সোমবার বিচারক বেগম রুবাইয়া ইয়াসমিন আব্দুল খালেক ও ও আব্দুল মাজেদকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। আর আব্দুর রাজ্জাককে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়। তাদের মধ্যে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী আব্দুল খালেক ও আব্দুল মাজেদ পলাতক রয়েছেন।