বগুড়ার উপ-নির্বাচনে বুধবার ভোট, অর্ধেকের বেশি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ

স্টাফ রিপোর্টার, অনুসন্ধানবার্তা:
সোমবার রাত থেকে শেষ হয়েছে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপ-নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। এখন শুধুই ভোটের অপেক্ষা। মঙ্গলবার সকাল থেকে ভোট কেন্দ্রে ইভিএম সামগ্রী পাঠানো শুরু হয়েছে।

এই দুই আসনে বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। এই দুই সংসদীয় আসনে প্রায় সাড়ে ৭ লাখ মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। তবে ভোট হবে ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে।

জানাগেছে, বগুড়া-৪ আসনের ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৯ জন প্রার্থী। এই আসনে আওয়ামীলীগ ১৪ দলীয় জোট থেকে জাসদ প্রার্থীকে সমর্থন দিয়েছে। এছাড়া বগুড়া-৬ (সদর) আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সহ মোট প্রার্থী রয়েছেন ১১ জন।

সোমবার (৩০ জানুয়ারি) দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত চলেছে প্রার্থীদের ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা। সরগরম ছিল গ্রামের হাট-বাজার থেকে শুরু করে শহরের অলিগলি। প্রার্থীরা নিজেদের সমর্থক ও ভোটারদের সঙ্গে শেষবারের মতো মতবিনিময় করে নেন।

উপ-নির্বাচনকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে বগুড়া-৬ (সদর) আসনের আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে।

এর মধ্যে ক্ষমতাসীন দলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লংঘনসহ প্রচারণায় বাধার অভিযোগ উঠেছে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষ থেকে। সুষ্ঠ নির্বাচনের দাবি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন বগুড়া-৬ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার বাদল।

একই সঙ্গে সুষ্ঠ নির্বাচনে দাবী তুলেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলম, আব্দুল মান্নান আকন্দ, জাতীয় পার্টির নুরুল ইসলাম ওমর।

তবে, হিরো আলম এবং আবদুল মান্নান আকন্দ যৌথভাবে ঘোষণা দিয়েছেন, ভোটের দিন দুপুর পর্যন্ত দেখব, যদি সুষ্ঠ ভোট না হয়, তারা দুই জনই একই সাথে ভোট বর্জন করবেন।

উপ-নির্বাচনে ভোটার ও কক্ষের পরিসংখ্যান:

বগুড়া জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রেজানা গেছে, বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯ জন। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১১২টি। আর ভোট কক্ষের সংখ্যা ৭৭৭টি। এর মধ্যে অস্থায়ী কক্ষ থাকবে ৪২টি।

এই আসনে মোট প্রিজাইডিং কর্মকর্তা থাকবেন ১১২ জন কর্মকর্তা। সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা থাকবেন ৭৭৭ জন এবং পোলিং অফিসার থাকবে ১ হাজার ৫৫৪ জন।

আর বগুড়া-৬ (সদর) আসনে মোট ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ১০ হাজার ৭৪৩ জন। ভোট কেন্দ্র হবে ১৪৩টি ও কক্ষ থাকবে ১ হাজার ১৭টি। এই আসনে ১৪৩ জন প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, ১ হাজার ১৭ সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও ২ হাজার ৩৪ জন পোলিং কর্মকর্তা নির্বাচনে থাকবেন।

বগুড়ার দুই আসনের ২৫৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১৫৮টি ভোট কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যার মধ্যে বগুড়া-৬ সদর আসনে মোট ১৪৩টির মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যা ৭৯টি। বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনেও মোট ১১২টির মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র ৭৯টি।

বগুড়া জেলার এই দুই আসনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ বগুড়া-৪-এর কাহালু উপজেলার ভোটকেন্দ্রগুলো। ওই উপজেলায় ৬৩টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৫৬টিই ঝুঁকিপূর্ণ। ওই আসনের নন্দীগ্রাম উপজেলার ৪৯টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ২৩টি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। অন্যদিকে বগুড়া-৬ সদর আসনে ১৪৩টি কেন্দ্রের মধ্যে সাধারণ কেন্দ্র ৬৪টি। বাকি ৭৯টি কেন্দ্রই ঝুঁকিপূর্ণ।

বগুড়ার উপ-নির্বাচনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বগুড়া জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, দুই আসনের উপ-নির্বাচনে ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৩৫ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করবেন। পাশাপাশি ১৬ প্লাটুন বিজিবি মোতায়ন থাকবে। এছাড়াও ভোট কেন্দ্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সাড়ে ৪ হাজার নিরাপত্তা কর্মী দায়িত্ব পালন করবেন।

বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রতিটি ভোট কেন্দ্রের গুরুত্ব বিবেচনায় নিরাপত্তার জন্য ৩ জন পুলিশ সদস্য ছাড়াও এপিবিএন, আনসার ভিডিপিসহ ১৭ নিরাপত্তকর্মী কাজ করবেন। ভোটকেন্দ্রের বাইরে ও নির্বাচনী এলাকায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পুলিশের স্ট্রাকিং ফোর্স ও বিজিবি সদস্যরা টহল দেবেন।