কাজিপুরের পাড়া-মহল্লায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে গোশত সমিতি

আবু তৈয়ব সুজয়, কাজিপুর (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় ব্যাপকভাবে সাড়া ফেলেছে গোশত সমিতি। প্রায় প্রত্যেক এলাকায় সামাজিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া বিষয়ক সহ বিভিন্ন পেশার মানুষের দু-একটি সমিতি রয়েছে। তবে এর মাঝে সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছে এই গোশত সমিতি। এই ধরনের নাম শুনলে অনেকেই অবাক হলেও যারা প্রত্যন্ত এলাকায় থাকেন তারা এই সমিতির মাধ্যমে ব্যপক উপকৃত হন। যার ফলে গ্রাম বা পাড়া মহল্লায় এর কদর দিন দিন বেড়েই চলেছে।

কাজিপুরের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় পবিত্র ঈদ উল ফিতর সামনে রেখে এই ধরনের গোশত সমিতি করা হয়। তাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বছরই সমিতি সংখ্যা ও লোক সংখ্যা বৃদ্ধি পায়। প্রতিটি সমিতিতে ৫০ থেকে ১০০ জন পর্যন্ত সদস্য থাকে।

সমিতি গুলোর সদস্যরা সারা বছর মাসে মাসে একটি নিদিষ্ট টাকা জমা রাখে। বছর শেষে অর্থাৎ রমজানের শেষে হাট থেকে পশু ক্রয় করে এবং ঈদের দু-একদিন আগেই পশু জবেহ করে সমানভাবে ভাগ করে নেয়। এতে দেখা যায় নিম্নবিত্ত ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত সকলের সমান ভাগে গোশত পান এবং ঈদের আগে তাদের বাড়তি কোনো চাপ থাকে না, সাচ্ছন্দ্য তারা ঈদ উদযাপন করতে পারেন। স্থানীয় ভাষায় এই সমিতিকে গোশত সমিতি বা মাংস সমিতি বলা হয়ে থাকে। অনেকেই গরু সমিতিও বলেন।

পাঁচগাছি গ্রামের গোলাম রব্বানী অন্যের জমিতে কাজ করে সংসার চালান। তিনি জানান, সারা বছর কাজ করে এই সমিতিতে টাকা রাখি, দেখা যায় সপ্তাহে অল্প টাকা ভাগে পড়ে যা আমার পক্ষে রাখা খুবই সহজ এবং বছর শেষে ঈদ টা আমরা ভালো ভাবে ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনীদের নিয়ে কাটাতে পারি বাড়তি চিন্তা করতে হয় না।

এরকম আরও হাজার হাজার কর্মক্ষম মানুষ যারা দিন আনে দিন খায়, মাসে একবারও গোশত খাইতে পারেনা, তারা এই সমিতির মাধ্যমে বছরের শেষে একটা আনন্দ সন্তান-সন্ততি নিয়ে খুব ভালোভাবেই কাটাতে পারে।

কাজিপুর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নেই প্রত্যন্ত এলাকা গুলোতে এই সমিতি গড়ে উঠেছে। পবিত্র শবে কদরের দিন থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত পশু জবাইয়ের কাজ চলে।